স্বামীকে বাঁচাতে ৪৫ দিনের শিশুকে বিক্রি করলেন মা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:স্বামীর জামিনের টাকা জোগাড় করতে ৪৫ দিনের শিশুকে বিক্রি করলেন মা। সম্প্রতি পুলিশের অনুসন্ধানে সামনে এসেছে এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা।

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ের শহরতলির মতুঙ্গা থানা এলাকায় ঘটেছে ঘটনাটি। মানবপাচারের অভিযোগে সেখানে মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৭ জনই নারী।

এই ৯ জনের মধ্যেই রয়েছেন ৩২ বছরের এক তরুণী। অভিযোগ, স্বামীকে জেল থেকে বের করার জন্য নিজের সন্তানকেই বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি!

জানা যায়, ওই তরুণীর স্বামী জেলে রয়েছেন। তার জামিন করাতে টাকার দরকার। তাই নিজের ৪৫ দিনের শিশু কন্যাকে কর্ণাটকে বিক্রি করতে দেন ওই মা! বদলে পান নগদ ১ লাখ টাকা।

এই ঘটনা সামনে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন অভিযুক্ত তরুণীর শাশুড়ি। তিনিই পুলিশের কাছে প্রথম অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত নারীর স্বামী রেল পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ রয়েছে। পরে তার কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এরপর তরুণী তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে জেলে যান। সেখানই তার স্বামী তাকে বলেন, যেভাবেই হোক টাকা জোগাড় করতেই হবে। না হলে তিনি জামিন পাবেন না।

ওই তরুণী তখন গর্ভবতী ছিলেন। পরে তিনি সন্তানের জন্ম দেন এবং স্থির করেন, স্বামীকে জেল থেকে ছাড়াতে সন্তানকেই বিক্রি করে দেবেন! তাতে তার হাতে জামিনের টাকা চলে আসবে।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আটককৃত নারী ইতোমধ্যেই স্বীকার করেছেন, সন্তানকে বিক্রি করে তিনি প্রায় ১ লাখ টাকা পেয়েছিলেন। কিন্তু তার শাশুড়ি পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ায় এবং পুলিশও সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়ায় সবকিছু সামনে চলে আসে।

এই ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পরই বিক্রি হয়ে যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করতে মাঠে নামে পুলিশ। দেশের নানা প্রান্তে বাচ্চাটির সন্ধানে খোঁজ শুরু করা হয়। উল্লাসনগর, সুরাত, ভদোদরা, কর্ণাটকে খোঁজখবর নেওয়া হয়। সেইসঙ্গে, পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে আট দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিক্রি হয়ে যাওয়া শিশুর মাকেও আটক করে পুলিশ।

পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রযুক্তিনির্ভর তদন্তের মাধ্যমে এই অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। সোমবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শিশুটিকেও উদ্ধার করে আপাতত নিজেদের হেফাজতে রেখেছে পুলিশ। যারা শিশুটিকে কিনেছিল, এবার তাদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।

আইএনবি/বিভূঁইয়া