নিজস্ব প্রতিবেদক
চলমান শুদ্ধি অভিযানের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আপনারা যাদের সন্দেহ করেছেন, গ্রেফতার হয়েছে। সামনে আরও গ্রেফতার হবে। এটা কোনও ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়। যে অপরাধী, তাকে গ্রেফতার করা হবে, আইনের আওতায় আনা হবে। সরকার এ ব্যপারে সংকল্পবদ্ধ। এই লক্ষ্য সামনে রেখেই শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে।’
রবিবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইইবি) মিলনায়তনের এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির উদ্যোগে ‘কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম’ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নের চক্র ভেঙে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। টার্গেট অ্যাচিভ না হওয়া পর্যন্ত শুদ্ধি অভিযান চলবে। কেউই পার পাবে না।’
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপির মন্তব্যকে নেতিবাচক রাজনীতি বলে অভিহিত করেছেন তিনি। ‘ভারতের সঙ্গে অসাংবিধানিক চুক্তি আড়াল করতেই সম্রাটকে গ্রেফতারের নাটক করছে সরকার’-বিএনপির এমন দাবির জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এই নোংরা রাজনীতির কারণে বিএনপি ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। রংপুরে তো ভাবসাব দেখে মনে হয়েছিল- তারা বিশাল জয় পেয়ে যাবেন। এতো জনপ্রিয় দল আপনারা, নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় পরও ভোটার উপস্থিতি কম হলো কেনো?’
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সাতটা সমঝোতা স্মারক হয়েছে। তিনটা প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। কোথায় কোন লাইনে, কোন অংশে অসাংবিধানিক কিছু আছে, অগণতান্ত্রিক কিছু আছে এটা তথ্য-প্রমাণসহ মির্জা ফখরুল সাহেব আপনাকে দেখাতে হবে। অন্ধকারে ঢিল ছুড়বেন না।’
বিএনপির সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগে শেখ হাসিনা ভারতে গেলেই বলতেন দেশ বিক্রি হয়ে গেছে। এখন শুরু করেছেন সংবিধান লঙ্ঘন হয়েছে। চুক্তি করলে আগে বলতেন- গোলামীর চুক্তি হয়েছে, অসংবিধানিক। কিন্তু মেমোরেন্ডাম কোনও চুক্তি নয়। দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় না থাকায় এটাও ভুলে গেছেন।’
শেখ হাসিনা দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব করে না বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশে নীরবে ডিজিটাল বিপ্লব হচ্ছে। এর রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয় ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি। যাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আমরা এই উদ্যোগ কাজে লাগিয়ে জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করেছি। আমাদের ডিজিটাল মিডিয়ায় খুব বেশি আসক্ত হওয়া যাবে না। সেখানে সব নেতিবাচক কথা প্রচার হয় না, ইতিবাচক কিছু কথাও আছে সেগুলো নিতে হবে, প্রচার করতে হবে।’
একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিককে ইয়াবা দিয়ে পুলিশ কর্তৃক ফাঁসানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যা ঘটেছে, তা দুঃখজনক। তার বিয়ের অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। এরপর আবার এই ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনা শুনে আমার খারাপ লেগেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি এই বিষয়টি জানেন। আমি এ বিষয়টি তাদের সঙ্গে মনিটর করবো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেছেন, তিনি ফিরে আসুন। আমি পুলিশের আইজির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো যাতে সন্মানজনক সুরাহা হয়।’
কর্মশালায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিডিইউ) উপাচার্য প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন উপকমিটির সদস্য সচিব এম এ সবুর, অধ্যাপক মাহফুজুল ইসলাম, সুফী ফারুক ইবনে আবু বকর।