মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিজ বাড়িতে সাজাভোগের আবেদন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:মালয়েশিয়ার কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক নতুন করে একটি আইনি আবেদন করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) করা ওই আবেদনে তিনি তার বাকি কারাদণ্ড ঘরে বন্দি অবস্থায় কাটাতে চেয়েছেন। তবে আদালতের কার্যক্রম নতুন প্রমাণ পর্যালোচনার জন্য প্রসিকিউটরদের সময় দেওয়ার কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রয়টার্স বলছে, নাজিব জুলাই মাসে নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করছেন। কারণ নিম্ন আদালত তার বিচারিক পুনর্বিবেচনার অনুরোধ খারিজ করেছিল। ওই অনুরোধে তিনি সরকারের কাছে প্রমাণিত ও বাস্তবায়নযোগ্য রাজকীয় আদেশের অস্তিত্ব নিশ্চিত করার আবেদন করেছিলেন যা তাকে তার বাকি শাস্তি বাড়িতে কাটানোর অধিকার দেবে।

নাজিব দাবি করেন, মালয়েশিয়ার সাবেক রাজা এবং ক্ষমা বোর্ডের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একটি ‘অতিরিক্ত আদেশ’ প্রকাশ করা হয়েছিল, যা তার দুর্নীতি মামলায় ১২ বছরের কারাদণ্ড অর্ধেক করে ছয় বছরে নামিয়ে আনে।

৬৯ বছর বয়সী রাজাকের অপরাধ তিনি মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় তহবিল ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদের (ওয়ানএমডিবি) কোটি কোটি মার্কিন ডলারের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। এই অপরাধে ২০২০ সালের ২৮ জুলাই তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন দেশটির একটি আদালত। একই সঙ্গে তাকে প্রায় ৫ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানাও করা হয়েছিল।

২০২০ সালে ওই দণ্ড ঘোষণার পর উচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন ১০ বছর দাপটের সঙ্গে মালয়েশিয়া চালানো নাজিব রাজাক। ওয়ানএমডিবি দুর্নীতির মামলার সাত অভিযোগের সবগুলোতে নাজিব রাজাককে দোষী সাব্যস্ত করেন মালয়েশিয়ার আদালত। প্রতিটি অভিযোগের জন্য আলাদাভাবে সাজা ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে একটি অভিযোগে নাজিবকে ১২ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানা করা হয়।  পরে মালয়েশিয়ার সাবেক রাজার সভাপতিত্বে একটি ‘ক্ষমা বোর্ড’ এই সাজা অর্ধেক করে দেয়।

আগস্টে ওই সাজার বিরুদ্ধে তার সর্বশেষ আপিলটিও সু্প্রিম কোর্ট খারিজ করে দেয়। আর গত অক্টোবরে উন্নয়ন তহবিলের বিলিয়ন ডলারের আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় জাতির কাছে ক্ষমা চান নাজিব রাজাক।

নাজিবের আইনজীবী মুহাম্মদ শাফি আব্দুল্লাহ জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে মঙ্গলবার একটি হলফনামা দাখিল করেছেন। তাতে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তিনি পাহাং রাজ্যের রাজপরিবার থেকে ওই অতিরিক্ত আদেশের কপি পেয়েছেন। সুরক্ষামূলক আদেশের কারণে মুহাম্মদ শাফি নথির বিষয়বস্তু প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানান। তবে তিনি বলেন, নথিটি নিশ্চিত করেছে যে নাজিবকে ঘরে বন্দি অবস্থায় শাস্তি কাটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবারের শুনানির পর সাংবাদিকদের শাফি বলেন, নতুন প্রমাণটি এই নথির অস্তিত্ব নিশ্চিত করার জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আপিল আদালত প্রসিকিউটরদের হলফনামা পর্যালোচনা করার জন্য সময় দিতে কার্যক্রম স্থগিত করতে সম্মত হয়েছে।

ফৌজদারি বিশ্বাসভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়ার দুই বছর পর ২০২২ সালে কারাগারে যান নাজিব।

 

আইএনবি/বিভূঁইয়া