নিজস্ব প্রতিবেদক: গতকাল শনিবার (১৮ এপ্রিল) ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরাইল উপজেলার বেড়তলা গ্রামে দেশে উদ্ভূত করোনা পরিস্থিতি উপেক্ষা করে কোনোরকম পূর্ব-ঘোষণা ছাড়াই মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলার মানুষদের নিয়ে বিভিন্ন কুটকথা পোস্ট করায় সাংবাদিক ও লেখক এমডি বাবুল ভূঁইয়া তাঁর ফেইসবুক আইডিতে তিনিও একটি খোলা চিঠি পোস্ট করেছেন। উনি তাঁর লেখায় মন্তব্য করে বলেন বাংলাদেশ আমাদের সবার। যা হুবুহু তোলে ধরা হল।
————খোলা চিঠি———-
আসসালামু অলাইকুম….।
প্রিয় দেশবাসি,
মরণঘাতি করোনা ভাইরাস আতংকে আমরা সবাই তেমন একটা ভাল নেই। আমি দোয়া করি আল্লাহ্ যেন দ্রুত এই দুর্যোগ থেকে আমাদের রক্ষা করেন।
আপনাদের সমীপে আমার কিছু কথা…
এই বাংলাদেশ আমার/আপনার এবং আমাদের সকলের। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেশের ৬৪টি জেলাই আমাদের সবার, তাই নয় কি?
আমাদের জাতীয় ক্রিকেট দল যদি কোন খেলায় জয়ি হন, আমরা সবাই এর আনন্দ একজন বাংলাদেশী হিসেবে ভাগ করে নেই, তাই নয় কি?
আবার হেরে গেলে সবাই শান্তনা হিসেবে বলে থাকি- জিতলেও বাংলাদেশ. হারলেও বাংলাদেশ…তাই নয় কি?
আমি আর কোন উদাহরণ টানব না। এই একটি উদাহরণ দিয়েই কয়েকটি লাইন লিখব–। গতকাল শনিবার (১৮ এপ্রিল) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন আলেম মারা গিয়েছেন। যার নাম মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারী। উনি কেমন ছিলেন (ভাল না মন্দ) সেই আলোচনা আমি করতে চাচ্ছিনা। এটা একান্তই মরহুমের বিষয়। কিন্তু আমি একজন মুসলমান হিসেবে উনার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
দুঃখের বিষয় হলেও সত্যি উনার জানাযায় লাখো লোকের সমাগম হয়েছিল। যদিও তাঁর দরকার ছিলনা। কয়েকজন মানুষ (লোক) নামাজে জানাযায় শরিক হলেও চলত। যেহেতু করোনা নামক মহামারি ভাইরাসের জন্য সরকার দেশব্যাপী লাকডাউন ঘোষনা করেছেন। আমাদের ইসলাম ধর্মেও আছে মহামারির সময় সবাই যেন নিজ নিজ স্থানে অবস্থান করি (সংক্ষেপে বললাম)।
তারপরও উপরোক্ত মরহুমের নামাজে জানাযায় উনার অনুসারীরা বিভিন্ন জেলা ও এলাকা থেকে নানা উপায়ে উপস্থিত হয়েছেন। এই বিষয়ে আপনারা ইউটিউবে মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারী লিখে সার্জ দিলে সব কিছু দেখতে পাবেন। প্রয়োজনে যে কেউ দেখে নিতে পারবেন।
হয়তো ধর্মভীরু সাধারণ মানুষের (আমাদের) সচেতনতার অভাব ছিল।
এদিকে সরকারও নানাভাবে দেশের মানুষ তথা আমাদের সচেতনতার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছেন। কিন্তু আমরা অনেকই তেমন একটা সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলছিনা। যার প্রমান আশাকরি আপনাদের দিতে হবেনা। এই বিষয়ে আপনারা সবাই অবগত আছেন বলে আমার বিশ্বাস।
কিন্তু প্রশ্ন হল-
যেখানে বিভিন্ন জেলা থেকে এবং আশেপাশের দুর দুরান্ত থেকে মানুষ এসেছে সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বা সেখানকার মানুষের কি দোষ? এর উত্তর বা বিচার আপনাদের বিবেকের কাছে দিলাম….।
একজন সাংবাদিক এবং একজন অভিনেতা কি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খারাপ লেখা পোস্ট দিয়েছেন? সাংবাদিক হল জাতির বিবেক আর শিল্পী বা শিল্প হল মানবিকতা (সংক্ষিপ্তরূপ)। এর বিচারও আপনাদের বিবেকের আদালতে রাখলাম…।
কিন্তু শিক্ষিত সুশিলরা কি করে একটি জেলাকে নিয়ে ট্রল করছেন..?
এবার আসেন আমাদের সাধারণ মানুষের কথায়….
বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন, সরকার ঘোষিত লাকডাউনে সবাই কি (সামাজিক দুরত্ব) মেনে চলেছেন? অবশ্যই না…..। যেহেতু পরিপূর্ন ভাবে আমি আপনি লকডাউন পালন করতে পারিনি, তাহলে আমাদের মুখে কেন এত বড় বড় নীতির কথা..? আমরা আসলে অন্যের দোষ খোঁজতে খুবই ভালবাসি…..যদি বলি তাহলে কি আমার খুব একটা অপরাধ হয়ে যাবে..? কেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে নিয়ে বিভিন্ন অপমান জনক পোস্ট করেছেন?
সব জেলাতেই কম বেশি খারাপ মানুষ আছে। কেউ সাধুনা…অতএব সাধু সাবধান..(সংক্ষিপ্তরুপ)
দেশের প্রত্যেকটা জেলায়ই কোন না কোন ঐতিহ্য লুকিয়ে আছে। তেমনি ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও অনেক ঐতিহ্য আছে, এইটা আমাদের বাংলাদেশের গর্ব। আর এই ঐতিহ্যের মালিক আমরা সবাই (বাংলাদেশের নাগরিক)। অতএব কোন জেলাকে নিয়ে সমালোচনা না করে, আসুন সবাই মিলে আমরা তাদের সচেতন করি, তাদের ভাল করার চেষ্টা করি। তা না হলে আগামীদিনের জন্য আপনিও প্রস্তুত থাকেন……..আপনার জন্যও এইরকম আকার ধারণ করবে আপনার এলাকায়…….শুধু সময়ের অপেক্ষায়…।
ভূলভ্রান্তি মার্জনীয়,,,আল্লাহ্ হাফেজ
আল্লাহ্ আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুন, আমিন, সুম্মামিন
লেখক
এমডি বাবুল ভূঁইয়া
আইএনবি/-