দেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি বেশ গতি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনসহ গত পাঁচ দিনে এক কোটির বেশি মানুষ টিকা পেয়েছে। ইতিমধ্যে টিকা নেওয়া মানুষের সংখ্যা পাঁচ কোটি ছাড়িয়েছে।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ কোটি দুই লাখ ৪৫ হাজার ২৫৫ ডোজ করোনা টিকার প্রয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন তিন কোটি ৩৩ লাখ ২৫ হাজার সাতজন এবং দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন এক কোটি ৬৯ লাখ ২০ হাজার ২৪৮ জন।
বৃহস্পতিবার রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর (শনিবার) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছিল, সেদিন পর্যন্ত চার কোটি দুই লাখের কিছু বেশি মানুষ টিকা নিয়েছে। এরপর সপ্তাহের পাঁচ দিনে আরও এক কোটির বেশি মানুষ টিকা পেয়েছে। এর মধ্যে ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ৮০ লাখ লোককে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়ার টার্গেট নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে এই টার্গেট এক দিনে পূরণ না হওয়ায় পরদিনও একযোগে চলে গণটিকা। ইতিমধ্যে সেই টার্গেট পূরণ হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে পুরুষ এক কোটি ৭৯ লাখ ৯৬ হাজার ২৪৭ জন আর নারী এক কোটি ৫৩ লাখ ২৮ হাজার ৭৬০ জন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে পুরুষ ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৫ জন আর নারী ৭২ লাখ ৩২ হাজার ৫৭৩ জন।
ইতিমধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড প্রয়োগ হয়েছে এক কোটি ২৯ লাখ ৫৫ হাজার ৭০ ডোজ। ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রয়োগ হয়েছে এক লাখ ৯০ হাজার ৯৫৫ ডোজ। চীনের সিনোফার্মের টিকা প্রয়োগ হয়েছে তিন কোটি ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৯ ডোজ। আর মডার্নার টিকা প্রয়োগ হয়েছে ৫১ লাখ ৮১১ ডোজ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চার কোটি ৯০ লাখ ৮৭ হাজার ৭২৮ জন করোনা টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এরমধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে চার কোটি ৮৪ লাখ ৪৫ হাজার ২৪৩ জন এবং পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে ছয় লাখ ৪২ হাজার ৪৮৫ জন নিবন্ধন করেছেন।
দেশে এখন পর্যন্ত টিকা এসেছে পাঁচ কোটি ৭০ লাখ ৮৫ হাজার ৮০ ডোজ। এর মধ্যে পাঁচ কোটি দুই লাখ ৪৫ হাজার ২৫৫ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এই মুহূর্তে টিকা মজুদ আছে ৬৮ লাখ ৩৯ হাজার ৮২৫ ডোজ।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে করোনার টিকাদান শুরু হয়। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। তবে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী টিকা পায়নি বাংলাদেশ। ফলে গণটিকাদান কর্মসূচি বেশ কিছু দিন বন্ধ রাখতে হয়। তবে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বেশ কিছু বিকল্প উৎস থেকে টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। আর টিকার সংকট হবে না বলে জানিয়েছে সরকার। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের বেশির ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা