কোনও হিন্দুকে ভারত ছাড়তে হবে না:অমিত শাহ

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনের আগে কলকাতায় এসে অমিত শাহ বলেছিলেন কোনও হিন্দুকে ভারত ছাড়তে হবে না। নতুন করে ক্ষমতায় যাওয়ার প্রায় মাস চারেক পরে আবার কলকাতায় এলেন অমিত শাহ ।
জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) নিয়ে সেই একই কথা বললেন, তবে এ বার আরও জোর দিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন কোনও হিন্দুকে ভারত ছাড়তে হবে না। যত রকম ভাবে কট্টর হিন্দুত্বের বার্তা দেওয়া সম্ভব, প্রায় তত রকম ভাবে সেই বার্তাও দিয়ে গেলেন বিজেপি সভাপতি।

অমিত শাহ বললেন, প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে ভারতে চলে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টানদের প্রত্যেককে নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়ার জন্য বিল পাশ করাতে চলেছে ভারত সরকার কিন্তু এক জন অনুপ্রবেশকারীকেও ভারতে থাকতে দেওয়া হবে না।

দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ গত কয়েক দিনে একাধিক বার বরেছিলেন যে, এ দেশে যে হিন্দুরা রয়েছেন বা এসেছেন, তাঁদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। তবে অমিত শাহ ১ অক্টোবর কী বলেন, তা শোনার অপেক্ষায় ছিল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বও।

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ দিন নিজের ভাষণে এনআরসি প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমি বাংলার জনতাকে সত্যিটা বলতে এসেছি।’’। তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন ।

অমিত শাহ বলেন, ‘‘মমতাজি বলছেন, এনআরসি হলে লক্ষ লক্ষ হিন্দু শরণার্থীকে বাংলা ছেড়ে যেতে হবে। এর চেয়ে বড় কোনও মিথ্যা হয় না। আমি সবার সামনে আশ্বস্ত করছি, সব শরণার্থীকে আশ্বস্ত করছি, যাঁরা এ দেশে চলে এসেছেন, তাঁদের কাউকে ভারত ছাড়তে বাধ্য করা হবে না।’’ এনআরসি নিয়ে তৃণমূল যা বলছে, তা ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে অমিত শাহ এ দিন দাবি করেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই মিথ্যাটা ছড়ানো হচ্ছে বাংলার মানুষকে উস্কে দেওয়ার জন্য।’’

তাঁর ভাষণের অর্ধেকটাই এ দিন ছিল এনআরসি এবং সিএবি প্রসঙ্গে। ভোটের আগে যতটা বলেছিলেন এই প্রসঙ্গে, এ দিন তার চেয়ে অনেক বিশদ ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। শাহ বলেন, ‘‘এনআরসি তৈরি করার আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনছে ভারত সরকার। ভারতে যত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান এসেছেন, তাঁদের সবাইকে নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়া হবে। চিরকালের জন্য দিয়ে দেওয়া হবে।’’

প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে ভারতে চলে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দিতে ওই বিল সংসদে পেশ করা হয়েছিল প্রথম মোদী সরকারের আমলেই— মনে করিয়ে দেন দ্বিতীয় মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার পরে সেই প্রসঙ্গেই নিশানা করেন তৃণমূলকে। অমিত শাহ বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব সংশোধন বিল যখন আনা হয়েছিল, তৃণমূল রাজ্যসভা চলতে দেয়নি। বিলটাকে পাশ হতে দেয়নি। তাই মতুয়া ভাইয়েরা-সহ অন্য শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া যায়নি।’’ শাহের আশ্বাস, ‘‘এখন পরিস্থিতি বদলেছে। এখন আর আটকাতে পারবে না।’’

তৃণমূলনেত্রীকে কটাক্ষ করে এ দিন অমিত শাহ প্রশ্ন তোলেন— বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন কেন মমতা নিজেই অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানোর দাবিতে সরব হয়েছিলেন? এখন সেই অনুপ্রবেশকারীরাই মমতার ভোটব্যাঙ্কে পরিণত হয়েছে, তাই তিনি এনআরসি হতে দেবেন না বলছেন।

আইএনবি/বিভূঁইয়া