নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর মধ্যে মানবিক সহায়তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে রংপুর বিভাগ সমিতি, ঢাকা।
দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে ঘরে থাকা বাধ্যতামূলক করায় কর্মহীন হয়ে পড়ে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব অঞ্চলের অনেক মানুষের।
এসব কর্মহীন অসহায় মানুষের সাহায্যে সরকারের পাশাপাশি সমাজের অনেক বিত্তবানরাই এগিয়ে আসে। তবে আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর মধ্যে প্রথম এগিয়ে আসে রংপুর বিভাগ সমিতি, ঢাকা। এই সংগঠন থেকে করোনা দুর্যোগে কর্মহীন হয়ে পড়া প্রায় পাঁচ হাজার অসহায় পরিবারকে খাদ্রসামগ্রী দেওযা হয়।
প্রথম দফায় সমিতিটি গত ৮ এপ্রিল ঢাকার হাজারীবাগ এলাকার লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের মাঠে রাজধানীতে বসবাসরত রংপুর অঞ্চলের কর্মহীন প্রায় এক হাজার পরিবারের মাঝে শতভাগ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চাল, ডাল ও আলুসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে।
তারপর সমিতিটি রংপুর বিভাগের আট জেলায় কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় পরিবারকে সহায়তা করার জন্য ত্রাণ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়। তহবিলে কয়েক দিনের ব্যবধানে ২০ লাখ টাকা জমা পড়ে। সমিতির নির্বাহী কমিটির সদস্য ছাড়াও রংপুরের কৃতি সন্তান এবং শুভাকাঙ্খীরা ত্রাণ তহবিলে অর্থ জমা দেয়।
সমিতির সভাপতি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নূরুল ইসলাম জানান, ‘তহবিলে জমাকৃত ২০ লাখ টাকা দিয়ে রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্র্রাম, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগর জেলার চার হাজার কর্মহীন পরিবারের জন্য খাদ্য ও জরুরি সামগ্রী কিনে সেগুলো সপ্তাহব্যাপী তাদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, অন্য আট-দশটা আঞ্চলিক সংগঠন থেকে আমাদের সংগঠনটি একেবারেই আলাদা। অন্য সংগঠনগুলির কার্যক্রম যেখানে অনেকটা পিকনিক এবং মিটিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ সেখানে দেশের যেকোনও দুর্যোগে অসহায় মানুষের সহায়তায় প্রতিষ্ঠার পর থেকে কাজ করে আসছে আমাদের সংগঠনটি।’
শতভাগ সামাজিক দূরত্ব রক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মহীন অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে প্রশাসনসহ সবার প্রশংসা জয় করায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআইজি আবু কালাম সিদ্দিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন সমিতির দপ্তর সম্পাদক, সাংগঠনিক এবং সহ সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ত্রাণ কাজে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ।
তিনি বলেন, ‘করোনা প্রাদুর্ভাবের এই সময় সামাজিক দুরত্ব রক্ষা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করাটা ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের। যেটা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছে আমাদের সদস্যরা।’
কর্মহীন মানুষের জন্য সমিতির খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ‘ দুর্যোগ পরিস্থিতিতে সরকারের পাশাপাশি যদি বিত্তবান ব্যক্তি এবং সংগঠনগুলি কাজ করে তাহলে এই দেশে কাউকে এক বেলাও না খেয়ে থাকতে হবে না।’
আইএনবি/সম্পাদনা-বিভূঁইয়া