স্বাস্থ্য ডেস্ক: প্রতিবছর যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয়, এর বড় একটি অংশ হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়। আর এটি হতে পারে যে কোনো বয়সেই।
হার্টের রোগের পরিণতি হতে পারে আমাদের জীবনের সমাপ্তি বা মৃত্যু, এজন্য আমাদের সচেতন হতে হবে হার্টকে সুস্থ রাখতে।
প্রতি বছর ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হার্ট দিবস। এ দিবসটি পালন করা হয় হার্ট বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশে। আমাদের মনে হার্ট সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন উঠে আসে, বিশেষ দিনে আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজেছি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে।
ঢাকার বারডেম হাসপাতালের কার্ডিওলোজি বিভাগের সহযোগী আধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. আজিজুল বারী হার্টের রোগ হওয়ার জন্য ধূমপানকে প্রথম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ধূমপায়ীরা সব থেকে বেশি হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকে।
এছাড়াও ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং বাড়তি ওজনের জন্য হৃদরোগ হতে পারে। হাইপার টেনশন এবং পারিবারিক জেনেটিক অসুস্থতার ফলেও হৃদরোগ দেখা দিতে পারে।
একবার হৃদরোগ হয়ে গেলে এর চিকিৎসা দীর্ঘ মেয়াদী এবং ব্যয় বহুল। আর তাই আগেই প্রতিকার-মূলক ব্যবস্থা নিলে রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যায়। এ সম্পর্কে আজিজুল বারী বলেন, ধূমপান সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে ও অ্যালকোহলসহ সব ধরনের মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পরিমিত খাবার খেতে হবে এবং নিয়মিত হাঁটতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ডাক্তার দিয়ে চেকআপ করাতে হবে। বয়স এবং উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কেননা, স্থুল শরীর হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। থাকতে হবে টেনশন মুক্ত ।
যদি হৃদরোগ হয়েই যায় তখন আমরা কী করতে পারি, এই বিষয়ে বললেন, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ রহমত উল্লাহ। তিনি বলেন, আমাদের হার্টের তিনটি রক্তনালীতে চর্বি জমে ব্লক তৈরি করে। ব্লকের পরিমাণ কম হলে সাধারণ চিকিৎসার মাধ্যমেই হৃদরোগ সারানো সম্ভব। তবে ব্লকের পরিমাণ বেশি হলে এনজিওগ্রাম পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয় কত শতাংশ ব্লক হয়েছে।
সঠিক ডায়গোনোসিসের পর একটি রক্তনালীতে ব্লক পাওয়া গেলে এনজিওপ্লাস্টি করে রিং পরানো হয়। এই চিকিৎসার পর ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে রোগী অনেক দিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারেন। এই চিকিৎসার খরচ একলাখ টাকার মধ্যেই করা সম্ভব।
তিনটি রক্তনালীতেই ব্লক হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে বাইপাস সার্জারি করতে হয়। এই চিকিৎসা কিছুটা ব্যয়বহুল। দুই থেকে তিন লাখ টাকার প্রয়োজন হতে পারে।
ডা. রহমত বলেন, তবে আশার কথা হচ্ছে, হৃদরোগের সফল চিকিৎসা দেশেই সম্ভব। তিনি আরও জানান, প্রাইভেট হাসপাতালের তুলনায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা ব্যয় কিছুটা কম।
বাসায় বা কর্মক্ষেত্রে কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হলে, সময় নষ্ট না করে যত দ্রুত সম্ভব হৃদরোগ সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
আইএনবি/বিভূঁইয়া