আন্তর্জাতিক ডেস্ক:বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত মহেশ সচদেব জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইলে দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রত্যর্পণের অনুরোধের বিরুদ্ধে লড়তে আদালতে যেতে পারেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৫ আগস্ট তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে প্রথম মামলা হয়। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে সারাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় গুলি করে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলার সংখ্যা দুইশ ছাড়িয়েছে। সোমবার পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ভারতের কাছে মৌখিক নোট পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরও কূটনৈতিক নোট পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
সচদেব জানিয়েছেন, ভারতের প্রত্যর্পণের অনুরোধগুলো যেমন বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে ইউরোপের দেশগুলো প্রত্যাখ্যান করেছিল, তেমনি শেখ হাসিনা চাইলে বলতে পারেন যে তিনি তার সরকারকে বিশ্বাস করেন না এবং তার সাথে অন্যায় আচরণ করা হতে পারে।
তিনি আরো জানান, সচদেব, প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যর্পণকে বাতিল করা যায়।
ভারতের সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, “ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তিতে বিভিন্ন সতর্কতা রয়েছে যা রাজনৈতিক ইস্যুতে প্রত্যর্পণকে প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু অপরাধমূলক বিষয়গুলো রাজনৈতিক বিবেচনায থেকে বাদ পড়ে। তাই সবকিছুই সেখানে আছে এবং এই সতর্কতা ব্যবহার করা যেতে পারে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যর্পণের আবেদনের বিরুদ্ধে লড়তে আদালতে যেতে পারেন এই বলে যে তার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হতে পারে। ভারত এমন উদাহরণও উদ্ধৃত করতে পারে যে আমরা নিশ্চিত নই যে তার সাথে ন্যায়বিচার করা হবে কিনা এবং বিচারিক আচরণ করা হবে কিনা।”
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তিটি ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং ২০১৬ সালে এটি সংশোধিত হয়েছিল। এটি ছিল একটি কৌশলগত পদক্ষেপ, যার লক্ষ্য ছিল দুই দেশের ভাগ করা সীমান্তে বিদ্রোহ ও সন্ত্রাসবাদের মতো সমস্যা মোকাবেলা করা। তবে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তিতে অপরাধ রাজনৈতিক প্রকৃতির হলে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের বিষয়ে বাংলাদেশের অনুরোধ প্রসঙ্গে সচদেব বলেন, “কর্তৃপক্ষ আজ প্রকাশ্যে উল্লেখ করেছে যে এই বিশেষ অনুরোধে ভারতকে একটি মৌখিক নোট দেওয়া হয়েছে। তাতে সঠিক অভিযোগগুরো উল্লেখ না করেই বিচারের মুখোমুখি করার জন্য তাকে (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশে প্রয়োজন।”
আইএনবি/বিভূঁইয়া