অজানা ভাইরাসে দুই মেয়ের মৃত্যু, বাবা-মা আইসোলেশনে

স্বাস্থ্য ডেস্ক: অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহীতে
পরপর দুই বোনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এরপর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের বাবা-মা। তাদেরও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া গেলেও প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

মারা যাওয়া শিশুদের নাম মুনতাহা মারিশা ও মুফতাউল মাশিয়া। আগামী ২ মার্চ দুই বছরে পড়ত মুনতাহা মারিশা। আর ৩০ মে মুফতাউল মাশিয়ার বয়স হতো পাঁচ বছর।

তবে তারা রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সারদায় ক্যাডেট কলেজের কোয়ার্টারে থাকতেন। কলেজ প্রাঙ্গণে থাকা গাছের বরই কুড়িয়ে এনে দুই শিশুকে খেতে দিয়েছিলেন বাসার গৃহপরিচারিকা। না ধুয়েই সেই বরই খেয়েছিল এই দম্পতির দুই শিশু সন্তান। এরপরই তারা অসুস্থ হয়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে মারা যায় বড় মেয়ে মাশিয়া। এর আগে গত বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) মারা যায় ছোট মেয়ে মারিশা। দু’জনেরই একই লক্ষ্মণ ছিল, জ্বর ও বমি। তাই শিশুদের বাবা-মাকে আর হাসপাতাল থেকে যেতে দেননি চিকিৎসকরা। তারা দুই মেয়ের দাফনেও অংশ নিতে পারেননি। বর্তমানে এই দম্পতি রামেক হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন।

রামেক হাসপাতালের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে থাকা মনজুর রহমান ও তার স্ত্রী পলি খাতুনের অবস্থা এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল। তবে তাদের পাশাপাশি শয্যায় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

পলি খাতুন জানান, ছোট মেয়ে মারিশার মৃত্যুর পর তার পুরো শরীরে ছোপ ছোপ কালশিটে উঠেছিল। আর বড় মেয়ে মাশিয়ারও একই রকম কালশিটে উঠতে শুরু করে মৃত্যুর আগের রাতে। এমন দাগ তিনি আগে কখনও দেখেননি বলেও জানান।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, দুই শিশুর মৃত্যুর কারণ এখনও নিশ্চিত নন তারা। তবে উপসর্গ দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। যদিও তারা খেজুর রস পান করেনি। তবে তারা না ধুয়ে গাছের বরই খেয়েছিল। তাই এটা নিপাহ ভাইরাস হতে পারে। তবে আবার অন্য কোনো ভাইরাসও হতে পারে। তাই কারণ নিশ্চিত হতে হাসপাতালে মারা যাওয়া মাশিয়া আর তার বাবা-মায়ের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রিপোর্ট পাওয়া যেতে পারে। তাদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আপাতত ওই দুই শিশুর বাবা-মা হাসপাতালের আইসোলেশনেই থাকবেন।

 

আইএনবি/বিভূঁইয়া