চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম মহানগরীর টেরিবাজার মোহাদ্দেছ মার্কেটের প্রার্থনা বস্ত্রালয়ের দোকানকর্মী গিরিধারী চৌধুরীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় সহকারী উপ-পরিদর্শক কামরুল হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। কামরুল কোতোয়ালী থানার অধীনে টেরিবাজার পুলিশ বিটে কর্মরত ছিলেন।
হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনার পরপরই ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, গিরিধারী চৌধুরীকে টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের নিয়োগ দেওয়া নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান কালের কণ্ঠকে বলেছিলেন, তিনি সরেজমিন অনুসন্ধানে পুলিশ পিটিয়েছে এমন তথ্য পাননি। ওই দিনই তিনি ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। যে কমিটির প্রধান করা হয় একই জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আবদুর রউফকে। অন্য দুজন সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী) এবং কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ।
এই তদন্ত কমিটিও তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বুধবার সন্ধ্যায় গিরিধারী চৌধুরীকে পুলিশ সদস্যরা পিটিয়েছে এমন প্রমাণ পায়নি। তবে কমিটি সহকারী উপ-পরিদর্শক কামরুল হাসানের অপেশাদার আচরণের কথা উল্লেখ করেছেন। গিরিধারী চৌধুরীর মৃত্যুর আগে ১৮ মার্চ অন্য এক ব্যক্তিকে মারধর করেছিলেন কামরুল হাসানা-এমন একটি ভিডিও ফুটেজের তথ্য ধরে কমিটি তার বিরুদ্ধে অপেশাদারিত্বের অভিযোগ তুলে।
পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন ও সহকারী উপ-পরিদর্শক কামরুল হাসান বরখাস্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নিহত গিরিধারী চৌধুরীর ছেলে পরেশ চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট সুরতাহাল রিপোর্ট করার সময় শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন। আমরা এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ ঘটনার চারদিন পরও মামলা করতে থানায় না যাওয়ার বিষয়ে পরেশ চৌধুরী বলেন, আমার এক বোন পুলিশে চাকরি করে। বোন ও ভগ্নিপতি চট্টগ্রামে আসার পর মামলা করব।
এই বিষয়ে মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কামরুল হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজুর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, পুলিশ গিরিধারী চৌধুরীকে মারধর করেছে এমন প্রমাণ তদন্ত কমিটি পায়নি। তবে ধস্তাধস্তির প্রমাণ পেয়েছে। আবার গিরিধারী চৌধুরীর সঙ্গে ওই দোকানের এক কর্মী ছিলেন, তাকেও চড়থাপ্পর মেরেছে বলে প্রমাণ পেয়েছে কমিটি। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়েছে সহকারী উপ-পরিদর্শক কামরুল হাসান অপেশাদার আচরণ করেছেন। এই কারণে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আইএনবি/বিভূঁইয়া