আইএনবি নিউজ: দায়িত্ব পালনের সময় পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় বিশেষ নজর দিতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রোববার ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের সংগঠন আইডিইবির ২৩তম জাতীয় সম্মেলন এবং ‘স্কিল রেডিনেস ফর এচিভিং এসডিজি অ্যান্ড অ্যাডপটিং আইআর ৪.০’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “আপনারা সারা বাংলাদেশে কাজ করেন। সেখানে আমাদের পরিবেশ এবং প্রতিবেশ রক্ষার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা, ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপণ এবং জলাধারসহ সবকিছু যেন সংরক্ষণ হয় সেদিকটা আপনাদের একটু বিশেষভাবে দেখতে হবে।
“আপনাদের কাছে আমাদের এই অনুরোধ থাকবে আপনারা কর্মক্ষেত্রে পরিবেশ রক্ষা, সেখানে উন্নয়নটা যেন আরও ভালোভাবে হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন।”
বাংলাদেশ একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই একশটা অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্দেশ্য হল, আমাদের কৃষি জমি যেন কোনোমতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।”
ছোট ভূখণ্ডের বাংলাদেশে বিশাল জনগোষ্ঠীর বসবাসের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “তাদের খাদ্য নিরাপত্তা ইতিমধ্যে আমরা নিশ্চিত করেছি। কারণ গবেষণা করে করে আমরা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি। কাজেই খাদ্য উৎপাদনের সাথে সাথে তাদের বসবাসের ব্যবস্থা করা, আমরা চাই এই বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না।
“মুজিববর্ষে বাংলাদেশ প্রতিটি গৃহহীন মানুষ অন্তত বসবাসের মত ঘর পাবে সেটা আমরা নিশ্চিত করব।”
দক্ষ জনশক্তির গুরুত্বের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পৃথিবীর এগিয়ে যাচ্ছে, কাজেই চতুর্থ শিল্পবিপ্লব হবে। তার জন্য আমাদের দরকার দক্ষ জনশক্তি। সে কারণেই আমরা কারিগরি শিক্ষার উপর সব থেকে গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছি। আমরা কারিগরি শিক্ষা, বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে সব থেকে প্রাধান্য দিয়ে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছি।
“আমরা সবসময় মনে করি একটি দেশকে যদি গড়ে তুলতে হয় দক্ষ মানবসম্পদই হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার জন্য ইতিমধ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”
দেশের উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
“একসময় বাংলাদেশ শুনলে অনেকেই মনে করত বাংলাদেশ মানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ, দরিদ্র দেশ, ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
“আজকের বাংলাদেশ কিন্তু সেই বাংলাদেশ না। দশ বছরে বাংলাদেশ আমরা পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছি। এই দশ বছরের মধ্যে আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আমাদের জিডিপি ৮.১৫ ভাগে উন্নীত করেছি। আমরা আরো বেশি উন্নতি করতে চাই। আমাদের একটা লক্ষ্য আছে। সেই লক্ষ্য পূরণ আমরা করতে চাই।”
দেশের নব্বই ভাগ উন্নয়ন প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন একটা চ্যালেঞ্জ ছিল আমাদের পদ্মা সেতু নিয়ে। আমরা বলেছিলাম আমরা নিজের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ করব। আজকে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে এই পদ্মা সেতু নির্মাণ করে যাচ্ছি। এই একটা সিদ্ধান্ত সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিতে পরিবর্তন এনে দিয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের ডিপ্লোমা প্রকৌশলীবৃন্দ সকলকে আমার অনুরোধ থাকবে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে..এই মাতৃভূমি এই দেশ আমাদের দেশ। আমরা এ দেশকে গড়ে তুলব উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে। যে সোনার বাংলার স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন।”
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, আইডিইবির সভাপতি একেএমএ হামিদ, সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আইএনবি/এনএম