সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার দেবহাটায় রোববার (১৯জানুয়ারী) দুপুর আড়াই টার দিকে পুষ্পকাটি গ্রামে নিজের হাতেই বাড়ীর আঙিনায় গর্ত করে ফাহিম হোসেন নামের দুই বছরের শিশুটিকে জীবন্ত মাটি চাঁপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন পাষন্ড মা শামিমা আক্তার বন্যা (৩০)।
মাটি চাঁপা দেয়ার একপর্যায়ে প্রতিবেশী কয়েকজন মহিলা শিশুটিকে গর্ত থেকে উদ্ধার করেন।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি উপজেলাব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে সোমবার সকালে তথ্যানুসন্ধানের জন্য কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে পৌছান। সেসময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই বছরের শিশুপুত্র ফাহিম হোসেনকে বাড়ির ভিতরে রেখে মুল গেটের বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় পাষন্ড মা শামিমা আক্তার বন্যাসহ বাড়ীর অন্যান্যরা।
একপর্যায়ে লোমহর্ষক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় একাধিক প্রতিবেশীরা জানান, শামিমা আক্তার বন্যা পুষ্পকাটি গ্রামের জনৈক ইব্রাহিমের মেয়ে। কয়েকবছর আগেই সদর উপজেলার কালিন্দি ছয়ঘরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল হাইয়ের পুত্র শিবলুর সাথে বিয়ে হয় তার। বর্তমানে শিবলু আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ানে কর্মরত রয়েছে। বিয়ের আগে দক্ষিন আলীপুর গ্রামের খবিরের ছেলে সুজন হোসেনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো বন্যার। ঘটনাটি জানতে পেরে বিয়ের পরে বিভিন্ন সময়ে স্বামী শিবলু সহ তার পরিবারের লোকজন বন্যার ওপর নির্যাতন শুরু করে। এরই মধ্যে জন্ম নেয় শিশুপুত্র ফাহিম। কিন্তু তাদের নির্যাতন বন্ধ না হওয়ায় শিশু ফাহিমকে নিয়ে বন্যা পুষ্পকাটিতে বারবার বাবার বাড়ীতে চলে আসে। সেখানেও দীর্ঘ সময় বন্যার সাথে যোগাযোগ করেননা স্বামী আর্মড পুলিশ সদস্য শিবলু। অন্যদিকে বন্যার মায়ের সাথেও রয়েছে কুলিয়ার হামজা মেশিনারিজের মালিক আলী হামজার পরকীয়ার সম্পর্ক।
এঘটনার জের ধরে চলতি বছরেই তাদের পারিবারিক কলোহ জোরালো হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে বন্যার বাবা ইব্রাহিম সংসার ত্যাগী হয়ে কর্মসংস্থানের খোজে বিদেশ পাড়ি দেয়। মায়ের পরকীয়ায় বাধা দিতে গিয়েও প্রতিনিয়ত মায়ে নির্যাতনের শিকার হতে হয় বন্যাকে। একদিকে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ীর লোকজনকে নির্যাতন এবং অন্যদিকে পরকীয়ায় বাধা দেয়া নিয়ে মায়ের নির্যাতনে হতাশা ও মানসিক যন্ত্রনায় বিষিয়ে উঠেছিলো বন্যা।
রবিবার দুপুরে বন্যা তার বাড়ীর আঙিনায় গর্ত খুড়ে শিশুপুত্র ফাহিম হোসেনকে জীবন্ত মাটি চাঁপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় প্রতিবেশী লিয়াকাতের স্ত্রী ঘটনাটি দেখতে পেয়ে গর্ত থেকে শিশু ফাহিমকে উদ্ধার করে। হয়তো বন্যা মানসিক যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে লোমহর্ষক এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে ধারনা স্থানীয়দের। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে বন্যার স্বামী আর্মড পুলিশ সদস্য শিবলুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আইএনবি/বিভূঁইয়া