আইএনবি নিউজ: ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন ঘিরে বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ক্ষোভের মধ্যে ভোট নিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে ঢাকায় কর্মরত পশ্চিমা দেশগুলোর দূতরা।
বৃহস্পতিবার তাদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, “ঢাকায় অবস্থিত কূটনীতিক এবং নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত পর্যবেক্ষক হিসেবে আমরা এই শহরের ভোট কেন্দ্রসমূহে গণতন্ত্রকে কার্যকর অবস্থায় দেখার প্রত্যাশা করছি।
“আমরা আরও আশা করছি যে বাংলাদেশের সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং সকল সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকারকে সম্মান জানাবেন এবং স্বচ্ছতা ও সততার সাথে ভোট গণনা করবেন।”
যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনার রবার্ট ডিকসন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের পাশাপাশি বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন কানাডার হাই কমিশনার বেনোয়া প্রেফেঁতে, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত সার্লোট্টা স্লাইটার, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এস্ট্রাপ পিটারসন, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জেরোন স্টিগস, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার পেনি মর্টন ও সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সুজান মুলার।
এই কূটনীতিক কেউ কেউ সিটি নির্বাচনের আগে ইসিতে গিয়ে খবরাখবর নিয়েছেন। প্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করেছেন কেউ কেউ। তাদের বৈঠকের খবরও গণমাধ্যমে এসেছে।
বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কূটনীতিকদের তৎপরতা থাকলেও স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে তাদের এত মনোযোগ নিকট অতীতে দেখা যায়নি।
কূটনীতিকদের তৎপরতা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবারই ইসিতে গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে আসে।
গত সংসদ নির্বাচনে একটি দেশের রাষ্ট্রদূত ক্যামেরা নিয়ে ভোটগ্রহণ কক্ষে ঢুকে পড়েছিলেন জানিয়ে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সে দিকে সতর্ক থাকতে ইসিকে অনুরোধ করেছে আওয়ামী লীগ।
ইসির সঙ্গে বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেন, “মান্যবর রাষ্ট্রদূতদের যথেষ্ট সম্মান করি। বাংলাদেশের মতো এত আদর-যত্ন কেউ করে না। সেটা তো অব্যাহত থাকবে। কিন্তু আতিথেয়তা মানে এই নয় যে কেউ সেটির সুযোগ নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করবে।”
কূটনীতিকদের তৎপরতায় বৃহস্পতিবার অসন্তোষ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “বেশ কিছু বিদেশি কূটনীতিক ব্রিটিশ হাইকমিশনে মিলিত হয়েছিলেন। তারা নিজেদের কাজ বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে নাক গলাচ্ছেন, যা একবারেই উচিৎ নয়।
“কূটনীতিকরা এসব বিষয়ে কোড অব কন্ডাক্ট মেনে কাজ না করলে তাদের দেশ থেকে চলে যেতে অনুরোধ জানানো হবে।”
ভোটের দুদিন আগে ক্ষমতাসীন দলের এমন অবস্থান প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মাথায় একযোগে বিবৃতি দিলেন নয়টি কূটনৈতিক মিশনের প্রধান, যা ব্রিটিশ হাই কমিশনের অফিসিয়াল ফেইসবুক পাতায় পোস্ট করা হয়।
আইএনবি/এন