আইএনবি নিউজ: রাজধানীসহ সারাদেশে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের সৃষ্টি হয়েছে। মালিক সমিতি ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তাদের নির্দেশনা ছাড়াই শ্রমিকরা বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছেন। এমনকি রাজধানী থেকে যে সকল গাড়ি ছেড়ে গেছে, সেগুলো আর ঢাকায় ফিরছে না। ফলে সারাদেশেই পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে।
নতুন সড়ক পরিবহন আইনের দু’টি ধারা সংশোধনের দাবিতেই তারা গাড়ি চালানো থেকে নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন। এর অন্যতম হলো সড়ক দুর্ঘটনায় কোনো চালক দোষী হলেও তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত জামিনযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। আর একটি দাবি হচ্ছে জরিমানার হার কমাতে হবে। এই দুই দাবি মানলেই কেবল সড়কে গাড়ি চালাতে নামবেন চালকরা।
যদিও তাদের এই দাবিকে অযৌক্তিক মনে করছেন মালিক পক্ষ। কেননা আইনটি বাস্তবায়নের আগে মালিক পক্ষ ও শ্রমিক নেতাদের অবগত করেই মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষাধীন রয়েছে। এখন এভাবে মানুষ জিম্মি করে দাবি আদায় করা যৌক্তিক নয়। শ্রমিক নেতা এবং শ্রমিকদের অধিকাংশই আইনের প্রতিটি ধারা সম্পর্কে অবগত নন। না জেনেই তারা আন্দোলন করছেন। অনেকে গুজবে সারা দিয়েই মাঠে নেমেছেন বলেও জানা গেছে। পরিবহন সেক্টরে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। সেখানে উপস্থিত থাকবেন পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা এবং শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। সেখান থেকেই সমাধান আসতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, ‘আমাদের গাড়ি সব রেডি আছে, ট্রাক শ্রমিকদের জন্য গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। বিষয়টি সুরাহার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি আজ (বুধবার) দুপুরের পরে বসবেন। আইন নিয়ে ওরা (শ্রমিকরা) একটা গুজব ছড়াচ্ছে, সেখানে আতঙ্ক কাজ করছে। এই কাজটা ঠিক করছে না। গতকালও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, আজকেও কথা বলবেন। গাড়ি বন্ধ রাখতে আমাদের কোনো নির্দেশনা নাই।’
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক নির্বাহী সদস্য মো. সালাউদ্দিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘গাড়ি বন্ধ রাখতে মালিকদের কোনো নির্দেশনা নাই, এটা শ্রমিকরা করছে। গাবতলীতে আমাদের সকল কাউন্টার খোলা আছে, টিকিটও বুকিং হচ্ছে। গাবতলী থেকে খুবই সীমিত আকারে গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে, কিন্তু যে জেলায় যাচ্ছে ওখান থেকে শ্রমিকরা আর গাড়ি নিয়ে ফিরতে দিচ্ছে না। গাড়ি ভাঙচুর করছে। এখানে তো মালিকদেও জিম্মি করে রাখা হয়েছে। মালিকরা সরকারের আইনের সঙ্গে একমত। কিন্তু শ্রমিক গাড়ি না চালালে আমরা কি করব?’
আইএনবি/বিভূঁইয়া