ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সালাউদ্দিনকে দ্বিতীয় স্ত্রীর যৌতুক নিরোধ আইনের মামলায় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার দুপুরে এ আসামি আদালতে হাজির হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আনোয়ার ছাদাত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সালাউদ্দিন কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার পরির্দশক ছিলেন। গত ২ ডিসেম্বর তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
জানা গেছে, সালাউদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুব মহিলা লীগের নেত্রী তাহমীনা আক্তার পান্না। তিনি গত ১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলাটি দায়ের করেন। এই মামলায় বিচারক সমন জারি করে সালাউদ্দিনকে ১৫ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। সমন অনুসারে রোববার সালাউদ্দিন আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পশ্চিম মেড্ডা এলাকার মৃত শরাফ উদ্দিনের মেয়ে তাহমিনা আক্তার পান্নার সঙ্গে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উত্তর মাদ্রাসা এলাকার সামসুল আলমের ছেলে সালাউদ্দিনের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। বিয়ের সময ১৫ লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়। বিয়ের পর তাহমিনা একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। তার বয়স তিন বছর। গত তিন থেকে চার মাস আগে তাহমিনার কাছে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন স্বামী সালাউদ্দিন। গত ১৫ নভেম্বর সালাউদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সামনে পুলিশের চাকরিতে পদোন্নতির কথা বলে আবার সেই ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের ওই টাকা না দিলে অন্যত্র বিয়ে করবেন বলেও তাহমিনাকে ভয় দেখান সালাউদ্দিন।
টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাহমিনাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন সালাউদ্দিন। পরে স্ত্রী ও সন্তানকে ফেলে রেখে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।
ওই ঘটনার পর বিষয়টি কুমিল্লার পুলিশ সুপারকে জানিয়েও কোনো বিচার পাননি তাহমিনা। পরে গত ২ ডিসেম্বর সালাউদ্দিনকে কোতোয়ালী থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। এ জন্য বিচার পাওয়ার আশায় তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত বলেন, ‘যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন স্ত্রী তাহমিনা। রোবাবর আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ছাড়া সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে কুমিল্লায় আরও দুটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। তার প্রথম স্ত্রীও মামলা করেছেন তার বিরুদ্ধে।’
আইএনবি/বিভূঁইয়া