লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন সৈয়দ আহমেদ (৬৫) নামের এক ব্যক্তি। স্ত্রী লুৎফুর নেছা দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন শারীরিক প্রতিবন্ধি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে রিকশাও ছেড়ে দিতে হয়েছে তাকে। ছেলে সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন পৌর শহরের ৯ নং ওয়ার্ডের এল.এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে।
নিজেদের ২৭ শতাংশ জমি থাকা সত্যেও একটি ঝুপড়ি ঘরে গাদাগাদি করে স্ত্রী, ছেলে সন্তান নিয়ে থাকছে সৈয়দ আহমেদ। তার দখলে মাত্র দেড় শতাংশ জমি। জানা গেছে, বাকি জমি স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছে।
সৈয়দ আহমেদ বলেন, ছেলে মেয়ে নিয়ে ভাঙ্গা ঘরেই জীবন যাপন করছি। আমার জমি থাকা সত্যেও পারি না ঘর তুলতে, না পারলাম টয়লেট বানাতে, আমার নাই রান্না ঘর। তারা আমার মায়ের কবর দিতেও দেয়নি ওই জমিতে। বাধ্য হয়ে ঘরের সামনেই মায়ের কবর দিয়েছি।
তিনি আরো জানান, তারা ৭ ভাই বোন মিলে ২০১৩ সালে ৯ শতাংশ জমি কিনেন। এছাড়াও তার মায়ের সম্পত্তি রয়েছে ১৮ শতাংশ। এর মধ্যে সৈয়দ আহমেদ দেড় শতাংশ ঘর করে থাকছেন। বাকি সম্পত্তি স্থানীয় প্রভাবশালী আলম, সাবেক কমিশনার তবিব উল্যাহ, বাচ্চু মিয়া দখল করে রেখেছে বলে তার অভিযোগ।
সম্প্রতি তিনি ঘর তুলতে গেলেও বাঁধা দেয় স্থানীয় এ প্রভাবশালীরা। ফলে তিনি আর ঘর তুলতে পারেননি। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি বহুবার সমাধান করার চেষ্টা করলেও অদৃশ্য শক্তির কারণে তা ফলপ্রসূ হয়নি। জমি বুঝে না পেয়ে দীর্ঘ চার যুগ ধরে হতাশায় দিন কাটতে হচ্ছে সৈয়দ আহমেদকে।
এলাকাবাসী জানান, সৈয়দ আহমেদের জমি তার বসত ঘরের আশেপাশেই রয়েছে। সেসব জমি প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে তার জমি উদ্ধার করে দিতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান তারা।
অভিযুক্ত আলম বলেন, কাগজপত্র অনুযায়ী সৈয়দ আহমেদের ২৭ শতাংশ জমি আছে এটা সত্য, তবে তা কোন জায়গায় আছে তা নির্দিষ্ট না। সে আমার অংশে যদি জমি পেয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তাকে বুঝিয়ে দেবো।
রায়পুর পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন রাসেল বলেন, সৈয়দের জমি সংক্রান্ত ঝামেলা বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করবো। সে নিরীহ মানুষ। তার প্রতি যাতে অবিচার না হয় বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখবো।
আইএনবি/বিভূঁইয়া