মোবাইলে কথা বলায় স্ত্রীকে হত্যা করলেন স্বামী

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:  কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চৌদ্দশত ইউনিয়নের চুপিনগর গ্রামে প্রেম করে বিয়ের ১০ মাসের মধ্যে স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন স্ত্রী।

বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী রোজা আক্তার শারমীন (১৯) স্বামী রোমানের হাতে খুন হন। মোবাইলে আরেকজনের সঙ্গে কথা বলায় শারমীনকে রোমান হত্যা করেন বলে জানা গেছে।

স্ত্রী হত্যার ঘটনায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন স্বামী মো. রোমান (২২)। শনিবার (১২ জুন) বিকেলে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাসলিম আক্তার এর খাসকামরায় রোমানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে রোমানকে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ঘাতক মো. রোমান কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চৌদ্দশত ইউনিয়নের চুপিনগর গ্রামের ওয়াহেদ ওরফে অহিদ মিয়ার ছেলে। তিনি পার্শ্ববর্তী পাকুন্দিয়া উপজেলার বিষ্ণুহাটির একটি ওয়ার্কশপে শ্রমিকের কাজ করতেন। অন্যদিকে নিহত রোজা আক্তার শারমীন একই গ্রামের আব্দুল করিমের মেয়ে।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান জানান, একই গ্রামে পাশাপাশি বাড়ি ও একসঙ্গে চলাফেরার সুবাদে রোমানের সাথে শারমীনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের এক পর্যায়ে প্রায় ১০ মাস আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে তারা বিয়ে করে। বিয়ের পর প্রথমে মেয়ের অভিভাবক মেনে না নিলেও এলাকাবাসীর উদ্যোগে তারা এই বিয়ে মেনে নেন। এরপর থেকে শারমীনদের বাড়িতেই রোমান ও শারমীন বসবাস করে আসছিল। সম্প্রতি শারমীনকে তার চাচাতো বোন টুনি’র মোবাইল থেকে কাকে যেন ফোন করতে দেখে রোমান। রোমান এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে শারমীন বিষয়টি এড়িয়ে যায়। এ নিয়ে রোমানের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়। এরপরও শারমীনকে একইভাবে ফোনে কথা বলতে দেখে রোমান। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার (১১ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে পার্শ্ববর্তী একটি ইটভাটার খালি জায়গায় শারমীনকে ডেকে নিয়ে এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে রোমান। পরে লাশ ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যায়। ঘটনা ধামাচাপা দিতে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে গিয়ে রোমান তার শাশুড়ি হালিমা খাতুনের কাছে শারমীনের খোঁজ করে। তখনই শাশুড়ি হালিমা খাতুন মেয়ে শারমীনকে আশপাশের বাড়িতে খোঁজাখুজি শুরু করেন। রোমানও তার শাশুড়ির সাথে থেকে স্ত্রী শারমীনকে খোঁজার ভান করে। এ সময় আত্মীয়স্বজনেরাও শারমীনের খোঁজ করা শুরু করে। এক পর্যায়ে রাত ৯টার দিকে আমিনের ইটভাটার খালি জায়গায় শারমীনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে চাচাতো ভাই রাসেল। পরে তারা লাশ নিয়ে পুলেরঘাট বাজারের পল্লী চিকিৎসক শহীদুল্লাহর কাছে নিয়ে গেলে তিনি শারমীনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে বলে জানান। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহত শারমীনের মা হালিমা খাতুন বাদী হয়ে শুক্রবার দিবাগত রাতে মো. রোমানকে একমাত্র আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো. আবুবকর সিদ্দিক পিপিএম জানান, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিরোধের জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

আইএনবি/বি.ভূঁইয়া