মেয়েকে বিয়ে না করায় শিক্ষককে চাকরিচ্যুতির হুমকি!

রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক পদে ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যোগদান করেন দুরুল হুদা। কিছুদিন পর প্রতিষ্ঠানে নতুন অধ্যক্ষ পদে উন্নীত হন উপাধ্যক্ষ শফিউল আলম। তিনি জুনিয়র শিক্ষক দুরুলকে নিজের বড় মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তাতে রাজি না হয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করায় তার ‘পেছনে’ লাগেন অধ্যক্ষ শফিউল আলম ও তার স্ত্রী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রউপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু। এখন দুরুল হুদাকে চাকরিচ্যুতির অব্যাহত হুমকি দিচ্ছেন তারা।

সোমবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা নগরীর মতিহার থানা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে এমন অভিযোগ করেন প্রভাষক দুরুল হুদা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ।

জিডিতে নুরুল হুদার অভিযোগ, মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার পর থেকে তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন অধ্যক্ষ শফিউল আলম ও তার স্ত্রী অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু। কিছুদিন পর স্কুলে অধ্যক্ষ অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা করলে অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে তিনিও দ্বিমত পোষণ করেন। এতে আরও ক্ষুব্ধ হন অধ্যক্ষ।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রী আমার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় মামলা দায়ের করেন। প্রভাব খাটিয়ে তারা আমাকে গ্রেফতারও করান। আদালত থেকে জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে আসলে আমাকে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ দিতে শুরু করেন তারা। পরে গণমাধ্যমেও মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়ে জামিন বাতিল করিয়ে আবার গ্রেফতার করানোর চেষ্টা করেন। তাতেও তাদের অপচেষ্টা সফল না হওয়ায় তারা আমাকে চাকরিচ্যুতি এবং প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে রাবি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শফিউল ইসলামের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার স্ত্রী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রউপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। দুরুল হুদা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে জিডি করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু বলেন, ‘জিডিতে যা বলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তাকে আমরা কেন চাকরিচ্যুত করতে যাব? সে অপরাধ করেছে, আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী কারও বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগে মামলা হলে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করে তদন্ত করা হয়। সেটাও এখনো করা হয়নি।’

আইএনবি/বিভূঁইয়া