নবীগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানা পুলিশ তিন সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুনকে গ্রেফতারে রাতভর চিরুনী অভিযান চালিয়েছে । তবে চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নবীগঞ্জ থানার ওসি (অপারেশন) আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ চেয়ারম্যানের বাড়িতে এবং তার নিজ গ্রাম মিনাজপুরে চিরুনী অভিযান পরিচালনা করে। এসময় চেয়ারম্যানের সহযোগী খালেদ আহমেদ (৩০) গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে পুলিশ আসার খবর পেয়ে আগেভাগেই ইউপি চেয়ারম্যান হারুন বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃত খালেদ মিনাজপুর গ্রামের আব্দুল মালিকের পুত্র ও ইউপি চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুনের মালিকানাধীন অরবিট হাসপাতালের ম্যানেজার।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে সাংবাদিক এম মুজিবুর রহমান বাদি হয়ে চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামী করে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১২-১৩ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
গত বুধবার নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে সরকারি ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের সংবাদ ও ফেইসবুকে লাইভ প্রচার করায় ক্ষুব্ধ হয়ে দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের প্রতিনিধি শাহ সুলতান আহমেদসহ ৩ সাংবাদিককে ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আউশকান্দি ইউনিয়নে নিম্ন আয়ের মানুষদের ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান তাদের দেন ৫ কেজি করে। এ নিয়ে গত ৩০ মার্চ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘আসুন অসহায় দিনমজুরদের মনের কথা শুনি’ শিরোনামে এক লাইভে সাধারণ মানুষের বক্তব্যসহ অনিয়মের বিষয়টি তুলে ধরেন সাংবাদিক সুলতান।
তারা বলেন, এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বুধবার বিকেলে ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে দেশীয় অস্ত্র সহকারে আউশকান্দি বাজারে শাহ সুলতান আহমেদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুন নিজেই ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন সুলতানকে।
এ খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করতে গেলে দৈনিক আমার সংবাদের প্রতিনিধি মুজিবুর রহমান ও চ্যানেল এস এর প্রতিনিধি বুলবুল আহমেদকেও মারধর করে সন্ত্রাসীরা। পরে স্থানীয় লোকজন শাহ সুলতানকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
কর্তব্যরত চিকিৎসক নির্দেশে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঘটনার পর টেলিভিশনের মিডিয়ার টক-শোতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে এবং জড়িতদের গ্রেফতার দাবী জানান বিভিন্ন সাংবাদিক নেতারা।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সাংবাদিক এম মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুনকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুর রহমান গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
আইএনবি/বিভূঁইয়া