আইএনবি নিউজ: নাগরিকত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ পাসপোর্ট বৈধ অনুষঙ্গ। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে পারাখতে গেলেই প্রথমেই লাগবে পাসপোর্ট। এই পাসপোর্ট প্রাপ্তি নিয়ে মানুষের ভোগান্তিরও শেষ ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (২২ জানুয়ারি) ই-পাসপোর্ট সেবার উদ্বোধন করেন ।
ই-পাসপোর্ট সেবার বিষয়ে সবিস্তারে জানতে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের আগারগাঁও অফিসে গিয়ে দেখা যায় পাসপোর্টের জন্য বহু মানুষের দীর্ঘ লাইন। কেউ এসেছেন নতুন পাসপোর্ট করতে, কেউবা পাসপোর্টের অবস্থান জানতে।
পাসপোর্টের আবেদন ফরম বা যেকোনো তথ্যের জন্য ১০৫নং কক্ষে সেবা প্রত্যাশীদের ভিড়। সেখানে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করা গেল দুজন মধ্যবয়সী লোক; একজন মো. নাইম আরেকজন রাজ্জাক। দুজনই ই-পাসপোর্টের জন্য ফরম চাইলেন। কাউন্টার থেকে তথ্য কর্মকর্তা বললেন, ই-পাসপোর্টের ফরম আমাদের কাছে নেই। এখনও আমাদের কাছে কোনো তথ্য আসেনি। মেশিন রিডেবল বা এমআরপি ফরম আছে।
পরে ওই তথ্য কেন্দ্রে ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। এরপর পাসপোর্ট অফিসে ঘুরে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল কেউ এ বিষয়ে পুরোপুরি অবগত নন।
পাসপোর্ট প্রত্যাশী মালেক বলেন, আমি ই-পাসপোর্টের খোঁজ নিতে এসেছি। আমার ও বাবা-মায়ের জন্য ই-পাসপোর্ট করাব। কিন্তু এখানে কেউ তথ্য জানে না। কাউন্টার থেকে বলল এমআরপি’র কথা, দেখি অন্য কেউ জানেন কিনা।
এরপর আরও কয়েকজন কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে দেখা যায় কেউ পরিপূর্ণভাবে জানেন না ই-পাসপোর্টের তথ্য। ই-পাসপোর্ট চালু হলেও এমআরপি বাতিল হয়নি। তাই যারাই-পাসপোর্ট পাচ্ছেন না তারা এমআরপি করতে পারবেন।
ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ এর দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর আমরাই-পাসপোর্ট চালু করে দিয়েছি। কিছু নীতিমালার আওতায় আমরা সাধারণ মানুষের অ্যাপ্লিকেশন রিসিভ করব। আমরা প্রাথমিকভাবে আগারগাঁও, যাত্রাবাড়ী ও উত্তরা থেকে ই-পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করছি। প্রতিদিন গড়ে ৩০০-৫০০টি আবেদন গ্রহণ করতে পারব। নতুন পদ্ধতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রথম দিকে একটু সময় লাগবে। যখন আমাদের লোকজন দক্ষ হয়ে উঠবে তখন আবেদন গ্রহণের গতি বেড়ে যাবে। তবে আগামী এক সপ্তাহ পরে ই-পাসপোর্টের বিষয়টি মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করার পর তাৎক্ষণিক ভাবেই আবেদনকারীকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে কবে তাকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হবে। উদ্বোধনের পর প্রথম দিনেই আগামী ৫ সপ্তাহের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। তাই এ মুহূর্তে ই-পাসপোর্টের আবেদন বুকড বলে জানা গেছে।
তাই ই-পাসপোর্ট চালু হলেও এখনও সবার জন্য সেবাটি ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। যাদের এমআরপি পাসপোর্ট আছে তারা সেই পাসপোর্ট নিয়েই চলতে পারবেন। আর নতুন করে এমআরপি পাসপোর্টের আবেদনও করা যাচ্ছে। তারপরেও মানুষের মাঝে ই-পাসপোর্টের কৌতূহল বেশি। যেই আসছেন সবাই ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে চাইছেন। কিন্তু কাউন্টার থেকে কোন ফরম দেওয়া হচ্ছে না। আর অনলাইনে আবেদন করলেও সাক্ষাৎকারের জন্য সময় মিলছে না। এজন্য ই-পাসপোর্ট চালু হয়েও হলো না।
আইএনবি/বিভূঁইয়া