স্বামীকে জিম্মি করে গর্ভবতী স্ত্রীকে ধর্ষণ

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার সুজানগরে অস্ত্রের মুখে স্বামীকে জিম্মি করে গর্ভবতী স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এতে গর্ভের সন্তান মারা গেছে বলে দাবি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় মামলা হলেও এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার পর থেকে নানা চাপে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

গত শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে উপজেলার আমিনপুরের সাগরকান্দি ইউনিয়নের চরকেষ্টপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর স্বামী।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- চরকেষ্টপুর গ্রামের মাজেদ প্রামাণিকের ছেলে সেলিম প্রামাণিক (২৩), একই গ্রামের শরীফ হোসেন (২৪), আনিছ সরদারের ছেলে রাজীব সরদার (২১), তালেব মন্ডলের ছেলে রুহুল মন্ডল (২৬), শফিক সরদারের ছেলে লালন সরদার (২০) ও শামসুল ইসলামের ছেলে সিরাজুল ইসলাম (২৩)।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চরকেষ্টপুর গ্রামে এক ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করা হয়। মাহফিলের ডেকোরেশনের কাজ করছিলেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী। টাকার প্রয়োজনে ওই নারী রাতে তার স্বামীর কাছে যান। সেখানে ওয়াজ শুনে রাত ১২টার দিকে স্বামী-স্ত্রী পাশের এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার পথে গতিরোধ করেন অভিযুক্ত ৬ যুবক। এ সময় তাদের দুজনকে নানা রকম প্রশ্ন করা হয়। একপর্যায়ে স্বামীকে অস্ত্র ও ব্লেডের মাধ্যমে জিম্মি করে ওই নারীকে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে অভিযুক্তদের দুইজন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ওই নারীর স্বামী তাদের কাছ থেকে ছুটে গিয়ে স্থানীয়দের জানালে তারা এসে একজনকে আটক করে এবং বাকিরা পালিয়ে যায়। এ সময় ওই নারীকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওয়াজ মাহফিল চলাকালীন রাত ১টার দিকে ওই নারীর স্বামী ছুটে এসে জানায়, কয়েকজন ছেলে তার স্ত্রীকে ধরে নিয়ে গেছে। পরে স্থানীয়রা গিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগীর নারীর স্বামী ও মামলার বাদী বলেন, আমার স্ত্রী তিন মাসের গর্ভবতী ছিল। ধর্ষণে গর্ভের সন্তান মারা গেছে। মামলা হলেও আমাদের এখনো কোনো কাগজপত্র দেওয়া হয়নি। পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করছে না। থানায় গেলে নানান কথা বলে। আর যারা ধর্ষণ করেছে তাদের পক্ষ থেকে নানা হুমকি ও চাপ আসছে। বলছে এ ঘটনায় কিছুই হবে না, তোমাদেরই বিপদ হবে তাই মীমাংসা করো। আমরা ধর্ষণ এবং আমাদের সন্তান হত্যার বিচার চাই।

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক তোফাজ্জল হোসেন কাদেরী বলেন, স্থানীয়রা ওই নারীকে উদ্ধার করে আমার কাছে নিয়ে আসলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেই। পরে তাদের বলি, ভুক্তভোগীকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে বা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে।

আমিনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, অভিযুক্তরা সবাই পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।

গ্রেপ্তারের বিষয়ে পুলিশি গাফিলতির বিষয়টি সঠিক নয় দাবি করে তিনি বলেন, আমরা গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। বাদীকে হুমকি-ধমকির বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। তাদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

 

আইএনবি/বিভূঁইয়া